1. admin@news24hour.net : admin :
মৌচাকে সোনার দোকানে চুরি, কর্মচারীসহ গ্রেপ্তার ৪ - নিউজ ২৪ আওয়ার
বুধবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ০১:১৫ অপরাহ্ন

মৌচাকে সোনার দোকানে চুরি, কর্মচারীসহ গ্রেপ্তার ৪

  • প্রকাশিত : রবিবার, ১০ নভেম্বর, ২০২৪
  • ৭৯ বার পঠিত

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীর মৌচাক মার্কেটের সোনার দোকানে ভয়াবহ চুরির ঘটনায় চোরচক্রের ৪ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। গ্রেপ্তাররা হলেন- মূল পরিকল্পনাকারী হিমেল মিয়া (২০), মাশফিক আলম (২৮), তার স্ত্রী আক্তার ইতি (২৭) ও মাশফিকের শ্বশুর আব্দুর জব্বার (৭০)। এ সময় সোনা বিক্রির ৫ লাখ টাকাসহ চুরি যাওয়া ৫২ ভরি সোনা উদ্ধার করা হয়েছে।

রোববার (১০ নভেম্বর) দুপুরে সিআইডি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সাইবার পুলিশ সেন্টারের (সিপিসি) ডিআইজি এস এন মো. নজরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ঢাকার মৌচাক মার্কেটে আসিফ জুয়েলার্সের স্বত্বাধিকারী মো. আলিম উদ্দিনের দোকানে বিগত চার বছর ধরে কর্মচারী হিসেবে কাজ করে আসছিল হিমেল মিয়া। হিমেল প্রথমে ছিল দোকানের ক্লিনার। তিন বছর কাজের অভিজ্ঞতা ও বিশ্বস্ততার জন্য দোকানের সেলসম্যান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। হিমেল দোকানের সেলসম্যান হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পরই সোনা চুরি করার অসৎ উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের পরিকল্পনা করে এবং সুযোগের অপেক্ষায় থাকে।

তার এ পরিকল্পনার কথা বন্ধু মহলে আলাপ করলেও বন্ধুরা তাকে এই কাজ করতে নিষেধ করে। পরে হিমেল সোনা চুরির বিষয়টি নিয়ে পূর্বপরিচিত ফারজানা আক্তার ইতির সঙ্গে আলোচনা করে এবং এক সঙ্গে বেশি সোনা হাতে পেলে তারা পরিকল্পনা বাস্তবায়নে একমত হয়।

আসিফ জুয়েলার্সের মালিক ও ম্যানেজার প্রায়ই হিমেলকে সোনার কাজ করানোর জন্য পাশের আনারকলী মার্কেটের কারখানায় সোনা দিয়ে পাঠাতেন এবং কাজ শেষ করে হিমেল সেগুলো দোকানে ফেরত নিয়ে আসতো। ঘটনার দিন গত ৩০ অক্টোবর হিমেলকে সোনা নিয়ে আসার জন্য কারখানায় পাঠানো হয়। হিমেল কারখানা থেকে আনুমানিক ৫৯ ভরি সোনা নিয়ে দোকানে না এসে পূর্বপরিকল্পনা মতো পালিয়ে গিয়ে চক্রের অন্যতম সদস্য মাশফিকের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করে তার পরামর্শেই মাশফিকের বাসায় তার স্ত্রী ইতির কাছে যায় এবং এর পর থেকে মোবাইল ফোন বন্ধ করে পলাতক হয়।

পরে একই দিনে চতুর হিমেল কৌশল অবলম্বন করে ৩৩ ভরি সোনা নিজের কাছে রেখে দিয়ে চক্রের অন্য সদস্যদের জানায় সে ২৫ ভরি সোনা সে চুরি করতে সক্ষম হয়েছে। হিমেল সোনাসহ ইতির বাসায় পৌঁছানোর পর ইতিকে সেগুলো রাখার জন্য দেয়। এরপর ইতি হিমেলকে সঙ্গে করে উত্তরা নিয়ে ময়মনসিংহের উদ্দেশ্যে বাসে উঠিয়ে দেয় এবং ইতির বাবা আব্দুর জব্বারকে ফোন করে বলে হিমেলকে রিসিভ করে ময়মনসিংহ সদরে তাদের বাসায় রাখার জন্য।

ডিআইজি নজরুল ইসলাম বলেন, দোকানে না আসায় এবং হিমেলের সঙ্গে যোগাযোগ করতে ব্যর্থ হওয়ায় আলিমুদ্দিন নিশ্চিত হন যে হিমেল সোনা চুরি করে পালিয়েছে। এ ঘটনায় আসিফ জুয়েলার্সের মালিক আলিমুদ্দিন বাদী হয়ে রমনা থানায় একটি চরির মামলা দায়ের করেন এবং সিআইডির কাছে সোনা উদ্ধারের উদ্দেশ্যে একটি অভিযোগ দেন। অভিযোগ পাওয়ার পর সিআইডি ছায়া তদন্ত শুরু করে।

এদিকে পরিবেশ পরিস্থিতি বুঝে আসামি মাশফিক তার স্ত্রী ইতির কাছে রাখা সোনার বার নিয়ে ময়মনসিংহ সদরে মাশফিকের শ্বশুর আব্দুর জব্বারের কাছে যায়। যাতে তারা ধরা না পরে সে জন্য আব্দুল জব্বার, হিমেল ও মাশফিক সোনার বারটি তিন টুকরো করে। সেখান থেকে একটি টুকরা (৭ ভরি) নিয়ে মাশফিক ময়মনসিংহের স্থানীয় সোনার দোকানে বিক্রি করে ৮ লাখ ১০ হাজার টাকা পায়।

পরে সেই টাকা থেকে হিমেল নিজের জন্য একটি iPhone 15 Pro, মাশফিক নিজের জন্য vivo v40 এবং ইতির জন্য একটি Honor 8xb মোবাইল এবং নিজেদের জন্য জামা-কাপড় কিনে। মাশফিক অবশিষ্ট টাকা, ১৯ ভরি সোনা ও প্রায় ৪ লাখ ৬১ হাজার ৫০০ টাকা নিয়ে ঢাকায় ফিরে তার স্ত্রী ইতির কাছে রেখে কক্সবাজার আত্মগোপনে চলে যায়।

সাইবার পুলিশ সিআইডির একটি চৌকস টিম তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় মাশফিকের কক্সবাজারে অবস্থান শনাক্ত করে অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেপ্তার ও সোনা বিক্রির ২৭ হাজার টাকা ও ৬৩ হাজার টাকা মূল্যের একটি vivo v40 মোবাইল ফোন উদ্ধার করে।

এরপর মাশফিকের দেওয়া তথ্যে মাশফিকের স্ত্রী ফারজানা আক্তার ইতিকে রামপুরা মৌলভীটেকের বাসা থেকে গ্রেপ্তার ও ডিপ ফ্রিজের ভেতর থেকে দুটি সোনার টুকরা (১৯ ভরি) এবং সোনা বিক্রির ৪ লাখ ৬১ হাজার ৫০০ টাকা উদ্ধার করা হয়।

ইতির দেওয়া তথ্য মতে পরে ময়মনসিংহে অভিযান করে ইতির বাবা আব্দুর জব্বারকে ময়মনসিংহ সদর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

জিজ্ঞাসাবাদে আব্দুল জব্বার জানায়, আসিফ জুয়েলার্সের কর্মচারী আসামি হিমেলকে সে তার ভাতিজার গৌরীপুরের বাসায় লুকিয়ে রেখেছে।

সাইবার পুলিশের অন্য একটি টিম ময়মনসিংহ গৌরিপুর বোকাইনগর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে হিমেলকে গ্রেপ্তার করে এবং তার কাছ থেকে ৩৩ ভরির একটি সোনার বার এবং সোনা বিক্রির টাকায় কেনা ১ লাখ ১৫ হাজার টাকা মূল্যের iPhone 15 Pro মোবাইল উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।

ডিআইজি নজরুল বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তাররা অপরাধে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। বর্তমানে মামলাটি সাইবার পুলিশ সেন্টারে তদন্তাধীন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরও খবর

ফেসবুকে আমরা

© স্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২২ নিউজ ২৪ আওয়ার
Theme Customized By Shakil IT Park